মুর্শিদাবাদ
ডোমকলের পালবাড়ির অকালবোধন - দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়
জমিদার বাড়ির পুজো বলে কথা। ১০৮ ঢাকে কাঠি পড়লেই এলাকার পাঁচটা গাঁয়ের মানুষ বুঝে যেত পাল বাবুদের বাড়িতে মায়ের আবির্ভাব ঘটেছে। গ্রামবাসীদের কথায় জমিদারি না থাকলেও পাল পরিবারের কর্তারা এখনও আছেন গ্রামে। নেই কেবল ১০৮ ঢাকি আর তার মন কাড়া বোল।
পুজোর শুরু
অবিভক্ত ভারতের ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের অধ্যাপক ছিলেন পরিবারের কর্তা শরৎচন্দ্র পাল। ডোমকলের বাজিতপুর গ্রামে তিনিই ১০৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পারিবারিক পুজোর। পরিবারের ছোট ছেলে গোপালকৃষ্ণ পাল বলেন, “এ বার আমাদের পুজো ১০৮ বছরে পা রাখল। এ বছরটাই ১০৮ ঢাকির কথা বার বার মনে পড়ছে। ওরা মিছিল করে নাচতে নাচতে আসত ক’টা দিন মহানন্দে কাটিয়ে ঘরে ফিরত। ওদের মধ্যে এত ভাল ঢাকি ছিল যে তাদের ঢাকের শব্দ শুনলেই মানুষ বলে দিত অমুক ঢাকি এসেছে।”
পুজোর বৈশিষ্ট্য
১০৮ জন ঢাকির সম্মিলন এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অধ্যাপক শরৎবাবু ছিলেন সংস্কারমনা। তিনি নারী এবং দলিত শ্রেণিকে গুরুত্ব দিতেন। তার লক্ষ্য ছিল অসংগঠিত ঢাকিদের সংগঠিত করা। পুজোর ক’টা দিনে আনন্দটা যেন তারাও গায়ে মাখতে পারে সে দিকে লক্ষ রেখে ১০৮ ঢাকির ব্যবস্থা। এই পুজোতে দেবী দুর্গার সঙ্গে দেখা মেলে রাম-লক্ষ্মণ-বিভীষণ-হনুমান ও জাম্বুবানের। প্রতিষ্ঠা বর্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে একাদশীতে বিসর্জন হয়েছিল এই পুজোর। আর তার পর থেকে সেটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর একাদশীতেই বিসর্জন হয় প্রতিমার।
ভোগ বিশেষত্ব
পুজোতে অন্নভোগ হয় না। লুচি, তরকারি, মণ্ডা, নাড়ু এ সবই প্রসাদ।
No comments:
Post a Comment