Monday, October 3, 2011

Durga Puja of Basirhat (24 Pgs - North)

উত্তর ২৪ পরগনা: বসিরহাট

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্বশুরালয়ের পুজো - দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়








কাঁটাতারের বেড়া। বেড়ার ও পারেই বাংলাদেশ। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতী নদী। গ্রামের একাংশের জীবিকা গামছা তৈরি। এ পারে এল এম জি-বাইনোকুলার হাতে বি এস এফ, ও পারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সর্বক্ষণ সজাগ দৃষ্টি রেখে চলেছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পাচার রুখতে সীমান্তে রাতকে দিন করতে লাগানো হয়েছে হাজার হাজার ওয়াটের হ্যালোজেন। ওই গ্রামেই পঙক্তি ভোজ খেতে দুর্গাপুজোরর দিনগুলিতে দুই বাংলার মানুষ জাতি ধর্ম ভুলে একত্রিত হয়।

বসিরহাটের এই গ্রামে শ্বশুরবাড়ি ছিল প্রকৃতি প্রেমিক লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শ্বশুরবাড়ি হওয়ায় বেশ কয়েকবার পুজোর সময়ে পানিতর গ্রামে এসেছিলেন বিভূতিবাবু। তিনি যে বকুল গাছের তলায় বসে লিখতেন সেই গাছটি আজও বিদ্যমান। স্মৃতি ধরে রাখতে গ্রামবাসীরা চণ্ডীমণ্ডপের সামনে বসিয়েছেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তি।

পুজোর শুরু

উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের পানিতর গ্রামে পুজোর প্রচলন হয়েছিল ১৭৬০ সালে।

পুজোর বৈশিষ্ট্য

জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয় নাটমন্দিরে। অতীত-রীতি মেনে এই পুজোর প্রতিমা এখনও তৈরি হয় গঙ্গামাটি দিয়ে।

পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য, অষ্টমীর দিনে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের একত্রিত হয়ে এক আসনে বসে ভোজ খাওয়ার রীতি। গ্রামবাসীরা একে ‘ভজরম’ উৎসব বলেন। তাদের দাবি, ভজরম উৎসবের বয়স পুজোর থেকেও প্রাচীন। এক বার ছাড়া কখনও ভজরম উৎসব বন্ধ হয়নি। ২০০০ সালে বন্যার সময় পানিতর গ্রামে সব ভেসে গিয়েছিল নদীর জলে। প্লাবিত হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশই ঘর ছাড়া হয়েছিলেন।

ভোগ বিশেষত্ব

মায়ের ভোগে চিরাচরিত ভাবে খিচুড়ি, কয়েকরকমের ভাজা, পঞ্চব্যঞ্জন, পায়েস, চাটনি ও দধি দেওয়া হয়। এ ছাড়া নানা রকম নৈবেদ্যর মধ্যে ফলের পরিমাণই বেশি থাকে। তবে অষ্টমীর দিন ভজরম উত্সবে যে ভোজের আয়োজন করা হয়, তার প্রধান পদ কিন্তু খিচুড়ি।


No comments:

Post a Comment